Father and son

“ঈদে আমাদের সুপারম্যান

মোহাম্মদ রাতুল শেখ।
আচ্ছা,সত্যিকারের সুপারম্যান দেখতে কেমন?তার ও কি অমন রংবাহারি জামা থাকে পরনে?বুকে কি সুন্দর করে লেখা থাকে ‘এস’!
আমি একজন সুপারম্যান কে দেখেছি।
বেশিরভাগ তার পরনে থাকে লুঙ্গি আর তিলে পড়া একটা ফতুয়া। আমার সুপারম্যান আমার বাবা।
একটু আগে আপনার পাশ দিয়ে হেটে গেল যে মানুষটা, পরনে সাদাসিধে একটা জামা,উষ্কখুষ্ক চুল,পায়ের স্যান্ডেলে জমে আছে ধুলো-আপনি কি নিশ্চিত মানুষটা সুপারম্যান নয়!
সত্যিকারের সুপারম্যানরা কি শুধু রুপালী পর্দায় থাকে,নাকি আমাদের খুব চেনা জগতেই?
সত্যিকারের সুপারম্যানদের পরনে কি রঙিন বাহারি জামা থাকতেই হয়!
নাকি রোদ,ঝড়-বৃষ্টির আড়ালে যে একটা পরিবারকে আগলে রাখে,কিছু মানুষের সপ্নকে বাঁচিয়ে রাখে সে কি সুপারম্যান হতে পারে না?
একজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, রিক্সাচালক,কৃষক কিংবা একজন দিনমজুর কি সুপারম্যান হতে পারে না?
একজন অতি সাধারণ মানুষের মধ্যেও কি থাকতে পারে না একজন অতি-মানব???
ঈদের পূর্বের এই ৫দিনে এ দেখা যাবে বাবা নামক সুপারম্যানটির আরো একটি ম্যাজিক্যাল পাওয়ার।সারা বছর এতো কষ্ট করে পরিবারের সকলকে আগলে রাখার পরও তিনি এতটুকু ও ক্লান্ত বোধ করবেন না। নিজের সর্বস্ব দিয়ে পরিবারের সকলের চাহিদা পূরণ করে যাবেন ।এ ব্যাপারে তার মার্কস ১০০ তে ১০০।পৃথিবীর বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক এর ও ক্ষমতা নেই এ ব্যাপারে তাকে অকৃতকার্য করবেন।বাবা নামক এই সুপারম্যানটি তার ছেলের হাতে ৮০০০-১০০০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বসুন্ধরা নামক রাজধানীর নামকরা শপিং-মল এ পাঠিয়ে দিবেন শপিং করার জন্য।সারা বছর যে মানুষটি এতো কষ্ট করে বুকের মধ্যে আগলে রেখেছেন সেই মানুষটির মুখের উপর ছেলেটি নির্লজ্জের মতো বলে দিবে বাবা এ কি দিলে তুমি???এ দিয়ে তো একটা ভাল পাঞ্জাবী আর শার্ট ও কেনা হবে না।এই কয়টা টাকা দিয়ে আমার ঈদের শপিং করা হবে???
কিন্তু ছেলেটি একবার ও কৃতজ্ঞের মতো তার বাবাকে জিজ্ঞেস করবে না বাবা তুমি কিছু কিনেছ? তোমার তো একটা পাঞ্জাবী কেনা দরকার। বাবা মুসকি হাসি দিয়ে বলবে হ্যা বাবা আমি সব কিনেছি,আমার শপিং করা শেষ।তুমি আজই গিয়ে শপিং করে আসো না হলে শপিং মলে খুব ভীর হবে এবং তোমাকে লোকের গায়ে পড়ে শপিং করতে হবে আর এটা তুমি নিশ্চয় চাইবে না।ছেলের সব দিকে চিন্তা তার।
কিন্তু ছেলেটি যদি বাসায় ভালো করে লক্ষ করে দেখে তাহলে দেখবে বাবার কিছুই কেনা হয় নি।গতবছরের পাঞ্জাবীটাই লন্ড্রি করে এবার দিব্বি চালিয়ে দেবে,পুরনো চামড়ার জুতার গায়ে আর একটু চামড়া লাগিয়ে এবার ও তিনি সেটা দিয়ে সেরে ফেলবে ঈদ এ জুতার চাহিদা।
এই হলো ছেলেটির সুপারম্যান। তিনি টেলিভিশন এর রঙিন পর্দার রঙ বাহারি জামা পড়া কোনো সুপারম্যান নন,তার বুকের মধ্যে বড় বড় করে লেখা নেই ‘এস’। তিনি বাস্তব জীবনের জীবন্ত এক সুপারম্যান।
আর এভাবেই সুপারম্যানটি পূরণ করে যাবে তার ছেলের এক একটি সপ্ন এক একটি আশা।আর আদর্শ হিসেবে রেখে যাবে কিছু ম্যাজিক্যাল পাওয়ার।আর সারাজীবন জ্যোতির মতো আলো ছড়াতে থাকবে এইসব পাওয়ার।
অকৃত্রিম ভালবাসা রইলো পৃথিবীর এমন সকল সুপারম্যান এর প্রতি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

ইনফিনিটি

নারায়ণগঞ্জ ইনফিনিটি ক্লাবের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

নারায়ণগঞ্জ বাণী ২৪.কম: নারায়ণগঞ্জে ইনফিনিটি ক্লাবের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬ মার্চ শনিবার নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া